• কবিতা সুর্মা


    কবি কবিতা আর কবিতার কাজল-লতা জুড়ে যে আলো-অন্ধকার তার নিজস্ব পুনর্লিখন।


    সম্পাদনায় - উমাপদ কর
  • সাক্ষাৎকার


    এই বিভাগে পাবেন এক বা একাধিক কবির সাক্ষাৎকার। নিয়েছেন আরেক কবি, বা কবিতার মগ্ন পাঠক। বাঁধাগতের বাইরে কিছু কথাবার্তা, যা চিন্তাভাবনার দিগন্তকে ফুটো করে দিতে চায়।


    সম্পাদনায়ঃ মৃগাঙ্কশেখর গঙ্গোপাধ্যায় ও তুষ্টি ভট্টাচার্য
  • গল্পনা


    গল্প নয়। গল্পের সংজ্ঞাকে প্রশ্ন করতে চায় এই বিভাগ। প্রতিটি সংখ্যায় আপনারা পাবেন এমন এক পাঠবস্তু, যা প্রচলিতকে থামিয়ে দেয়, এবং নতুনের পথ দেখিয়ে দেয়।


    সম্পাদনায়ঃ অর্ক চট্টোপাধ্যায়
  • হারানো কবিতাগুলো - রমিতের জানালায়


    আমাদের পাঠকরা এই বিভাগটির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন বারবার। এক নিবিষ্ট খনকের মতো রমিত দে, বাংলা কবিতার বিস্মৃত ও অবহেলিত মণিমুক্তোগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে আনছেন, ও আমাদের গর্বিত করছেন।


    সম্পাদনায় - রমিত দে
  • কবিতা ভাষান


    ভাষা। সে কি কবিতার অন্তরায়, নাকি সহায়? ভাষান্তর। সে কি হয় কবিতার? কবিতা কি ভেসে যায় এক ভাষা থেকে আরেকে? জানতে হলে এই বিভাগটিতে আসতেই হবে আপনাকে।


    সম্পাদনায় - শৌভিক দে সরকার
  • অন্য ভাষার কবিতা


    আমরা বিশ্বাস করি, একটি ভাষার কবিতা সমৃদ্ধ হয় আরেক ভাষার কবিতায়। আমরা বিশ্বাস করি সৎ ও পরিশ্রমী অনুবাদ পারে আমাদের হীনমন্যতা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরটি সম্পর্কে সজাগ করে দিতে।


    সম্পাদনায় - অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়
  • এ মাসের কবি


    মাসের ব্যাপারটা অজুহাত মাত্র। তারিখ কোনো বিষয়ই নয় এই বিভাগে। আসলে আমরা আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কবিকে নিজেদের মনোভাব জানাতে চাই। একটা সংখ্যায় আমরা একজনকে একটু সিংহাসনে বসাতে চাই। আশা করি, কেউ কিছু মনে করবেন না।


    সম্পাদনায় - সোনালী চক্রবর্তী
  • পাঠম্যানিয়ার পেরিস্কোপ


    সমালোচনা সাহিত্য এখন স্তুতি আর নিন্দার আখড়ায় পর্যবসিত। গোষ্ঠীবদ্ধতার চরমতম রূপ সেখানে চোখে পড়ে। গ্রন্থসমালোচনার এই বিভাগটিতে আমরা একটু সততার আশ্বাস পেতে চাই, পেতে চাই খোলা হাওয়ার আমেজ।


    সম্পাদনায় - সব্যসাচী হাজরা
  • দৃশ্যত


    ছবি আর কবিতার ভেদ কি মুছে ফেলতে চান, পাঠক? কিন্তু কেন? ওরা তো আলাদা হয়েই বেশ আছে। কবি কিছু নিচ্ছেন ক্যানভাস থেকে, শিল্পী কিছু নিচ্ছেন অক্ষরমালা থেকে। চক্ষুকর্ণের এই বিনিময়, আহা, শাশ্বত হোক।


    সম্পাদনায় - অমিত বিশ্বাস
  • ধারাবাহিক উপন্যাস


    বঙ্কিমচন্দ্র


    অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত

Wednesday, April 13, 2016

অনুপম বলছি

বাংলা আজ পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম ভাষা। আন্তর্জাতিক দরবারে তার মর্যাদা কারও চেয়ে কম নয় অবিশ্যি এতে দৃপ্ত হওয়ার কারন আছে, অহমিকার সুযোগ নেই সংখ্যার আধিক্য উৎকর্ষের মাপকাঠি হতে পারে না। বিশেষ করে প্রশ্ন ওঠে, আন্তর্জাতিক দরবারে আমরা কোন বাংলার কথা বলব? কৃষ্ণনগরের বাংলা, বাঁকুড়ার বাংলা, পুরুলিয়ার বাংলা, কোচবিহারের বাংলা, চট্টগ্রামের বাংলা নাকি মৈমনসিংহের? মৈমনসিংহের বাংলা আর কৃষ্ণনগরের বাংলার আপাত পার্থক্য তো সামগ্রিক বাংলা ভাষা আর ওড়িয়া ভাষার ভেদের চেয়ে খুব কম নয়! এবং এর মধ্যেই প্রতি মুহূর্তে জন্মাচ্ছে আমাদের বাংলা কবিতা। বাংলা ভাষায় যেমন বিবিধের মধ্যে ঐক্যের সুযোগ আছে, তেমনই তার অনেক আঞ্চলিক আর একটিমাত্র মান্যতাপ্রাপ্ত রূপের মধ্যে সংঘাতের সুযোগও কিন্তু আছে। প্রতিষ্ঠানের চাপিয়ে দেওয়া ভাষায় যে বাংলা কবিতার ইতিহাস তৈরি করা হয়, এই কারনেই কি আজ বাংলা কবিতা বিচ্ছিন্নতার শিকার হচ্ছে, যে অভিশাপটা পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষাকে ঠিক এভাবে বইতে হয় না? পুরুলিয়ার ভাষায় লেখা কবিতা বাংলা কবিতা হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক মান্যতাই পাবে না, সে কৃষ্ণনগরের ভাষাকে অবলম্বন করতে বাধ্য, অথবা তাকে আঞ্চলিক কবিতা হিসেবে ব্রাত্য ও বঞ্চিত হয়ে থাকতে হয়
বাংলা কবিতা আজ তর্কাতীতভাবেই আন্তর্জাতিক, কারন ভারত ও বাংলাদেশ এই দুটি রাষ্ট্রে তার বিস্তার। এ-রকম ভাবার কোনো কারন কি আছে যে, বাংলাদেশে কবিতার মাটি বেশি উর্বর আর এই পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে গদ্যসাহিত্যের ফলন বেশি স্বাভাবিকভাবে হয়?এটা অস্বীকার করার অবিশ্যি উপায় নেই যে, আমাদের ভাষার অগ্রগণ্য কবিদের অধিকাংশই পূর্ববঙ্গজাত। এ হয়ত নিছক সমাপতন। তবে এটাও ঘটনা, পূর্ববঙ্গের কথ্য বাংলাটি অনেক বেশি লালিত্যময় ও লিরিকাল, তার প্রাণও হয়তো বেশি মাটিছোঁয়া, এবং পশ্চিমবঙ্গের স্বীকৃত ভাষাটি ব্রিটিশ ইংরেজির মতোই পাথুরে যুক্তি মেনে চলে, এবং সেই যুক্তি তার বিভিন্ন কথ্য রূপকেও প্রভাবিত করে, ফলে গদ্যটাই ভালো হয় এখানেআমরা যে বাংলাকে অবলম্বন করেছি সে কিন্তু ইংলিশ-আশ্রয়ী। ইংরেজির যুক্তিকাঠামো আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক বাংলা কবিতাতেও আশা করা হয়, তবেই সে পন্ডিতদের ছাড়পত্র পায়। অন্যথায় তাকে লোকসাহিত্যের কোটায় ফেলে দেওয়া হয়। লোকসাহিত্যের আভিজাত্য এবং বুদ্ধিমত্তাকে খুব বেশি মান্যতা দেওয়া হয় না, তার প্রধানত আবেগের ছাড়পত্র থাকে।

পৃথিবীর অন্যতম প্রধান এবং আন্তর্জাতিক ভাষায় লিখিত হয়েও তাই ২০১৬-র প্রাতিষ্ঠানিক বাংলা কবিতার সর্বাঙ্গে একরকমের ভ্রান্তি ও কৃত্রিমতা লেগেই আছে, যা তাকে সাধারণের কাছে যেতে দেয় না, আবার তাকে বিশ্বজনীন গুরুত্ব পেতেও বাধা দেয়। এটা এই ২০১৬-র বাস্তবতা। বাংলা কবিতার প্রাতিষ্ঠানিকতা বাংলাভাষার স্বাভাবিক জায়মানতাকে যথাসাধ্য আটকে রেখেছে আজও। আজও একজন কবির যুক্তির বাইরে পূর্ণচ্ছেদ বসানোর অধিকার স্বীকার করা হয় না, কারন সেই অধিকারের মাপকাঠি উপনিবেশসূত্রে পাওয়া ব্রিটিশ যুক্তিকাঠামো। ভারতীয় আইনব্যবস্থা যেমন আজও ব্রিটিশ আইনকেই কিছু রদবদলের মাধ্যমে মেনে চলছে, ভারতীয় উকিল যেমন আজও ব্রিটিশ উকিলের পোশাকেই শোভিত, বাংলা কবিতার প্রাতিষ্ঠানিক রূপটি থেকেও ব্রিটিশ যুক্তিকে আজও মুছে ফেলা যায়নি। সেই তাগিদও খুব কম কবির ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, দেখা যাচ্ছে। এর পিছনে একটা বিরাট কারন হল বাঙালি কবির উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ভ্রমণপিপাসা ও দেশপ্রেমের অভাব। একমাত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাড়া আর কোনো বাঙালি কবিই দেশের মাটি কপালে নিয়ে পৃথিবীকে জয় করার স্পর্ধা দেখাননি। রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিক হয়েছিলেন কারন সেটার জন্য প্রয়োজনীয় চেষ্টা উনি করেছিলেন। তাঁর পরে আর কেউ ওই আকাঙ্ক্ষা দেখাননি। যারা দেখিয়েছেন তাঁদের সাধ্যে কুলোয়নি। বিদেশে বাস করেও তাঁরা শুধুই কলকাতার কবি হয়ে থেকে গেছেন।

অনুপম মুখোপাধ্যায়
          পরিচালক বাক্


অতনু বন্দোপাধ্যায়

আমিই কবিতার প্রথম আর শেষ ঘরবাড়ি


(আমরা নিচের উদ্দীপকটি পাঠিয়ে কবি অতনু বন্দোপাধ্যায়কে একটি গদ্য লিখতে অনুরোধ জানাই। উনি গদ্যের আকারে না লিখে প্রায় প্রশ্নোত্তরের মত এই লেখাটি আমাদের পাঠান। আমরা সেটিকেই এবারের কবিতা সুর্মার গদ্য হিসেবে বিবেচনা করলাম। একটু হলেও ভিন্নরকম, ভিন্ন স্বাদ। উদ্দীপকটি ছিল--
ক) একটা কবিতা লেখার আগে ও পরে কবির মনোভাব/ আলোড়ন।
খ) কবিতা নির্মাণ বিনির্মাণে রান্নাঘর বৃত্তান্ত।
গ) কবিতার উৎসমুখ ও কলম--- বনিবনা বে-বনিবনা।
ঘ) কবিতার ঘরবাড়ি ও আসবাব।
ঙ) নিজ দর্পণে নিজের কবিতা।)        বিভাগীয় সম্পাদক।



@ কবিতা লেখার আগে ও পরে কবির নিজস্ব অনুভূতি নিয়ে আলোচনা অবান্তর

কবি কবিতা লেখেন তার নিজস্ব তাগিদে।
কবিতার কোন কেন্দ্রবিন্দু হয় না।
আমি অন্তত কোন ডিকস্‌ন মানি ......না।
যা হয় সেটা হল শুধু ভাল লাগা আর ভাল থাকা।
আলোড়ন যেটা হয় তা কবিতায় রিফ্লেক্ট করে।তোলপাড় যা হয় তা আমার নিজের।

@ কবিতা নির্মাণ বিনির্মাণের রান্নাঘর

আমি বিনির্মাণে কোন বিশ্বাস রাখি না।সবটাই আমার কাছে নির্মাণ।হয়তো এটাকে অনেকেই বিনির্মাণ বলবেন......কিন্তু আমার কাছে একটা নির্মাণ বারবার হতে পারে আর সেটা নির্মাণের পরের নির্মাণ।
আর রান্নাঘর বলতে আমি নিজে।আমার এই শরীরটাই আমার শেষ হাতিয়ার।তুমি যাই বল আর আমি পারি না পারি......সেটুকুই আমার কবিতা।আমার নির্মাণ

@ কবিতার উৎসমুখ কলম......।।বনিবনা না-বনিবনা

কবিতার উৎস একটা থাকেই...সেটা আনন্দের হতে পারে কিম্বা বেদনার হতে পারে।বা এ রকমও হতে পারে যে সেখানে কিছুই থাকলো না শুধু আমার অনুভব ছাড়া।
এখানেই বনা না-বনা......আমার কবিতাকে আমি কতখানি আমার হয়ে উঠতে দেব।আমি কবিতা নিয়ে কোন পর্যন্ত শুধু কবিতার কথা বলবো।
না-বনিবনা টাও দরকার। সবটা মিলিয়ে আমি কতখানি কবি হয়ে উঠতে পারছি এটাও তৃতীয় চোখ দিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে।

@ কবিতার ঘরবাড়ি আসবাব

আমার কাছে আমিই কবিতার প্রথম আর শেষ ঘরবাড়ি।
কবি তার উপলব্ধি চোখের চারপাশে ছড়িয়ে দেন। কোন প্রতিবাদ করেন না।
এটা এরকমও ভাবার কারণ নেই চারপাশ প্রথাগত ভাবে ছুঁচ্ছে না বলে আমার নিজেকে লেখার অনেক অন্তরায় হচ্ছে।
তবু চলে যাবার সময়  একটা অহংকার থাকে......আমার কিছু কিছু জিনিস।সেটা যা খুশি হতে পারে।


@ নিজ দর্পণে  নিজের কবিতা

প্রথমত নিজের  কবিতা ছাপার আকারে দেখতে খুব ভাল লাগে। কেন লাগে জানি না?

অস্থিরতা    আবহ সংগীত    পরিমার্জনা  ব্যাপ্তি  ভালবাসা......নিদারুণ। এরা কেউ কাউকে ছুঁতে চায় না। আমি যদি নিজেকে আয়নায় দেখি তাহলে ঠিক আমাকে সেইদিন ভুলে যেতে হবে আমার সাথে বারীন ঘোষাল আর প্রবীর রায়ের দেখা হয়েছিল।

কবিতা পরিমার্জনা করবেন পাঠক। আর কবিতা মনে রাখবেনও পাঠক। আমার কাজ এই ভাবনাকে নিজের সাথে একাত্ব করার সেই চেষ্টাটাই করা যাতে সবটাই হয়তো সুন্দর হতে পারে।

আমার আয়নায় আমার কবিতা শুধু আমার আর না বলতে পারা পোয়াতি পেটের জন্য।


তোমাকে দেখতে পাওয়াটাও শুধু মাত্র আমার কবিতা । 



অমিতাভ মৈত্র

।। রেডিও থেরাপির আগের সন্ধ্যা ।।


হাসো, হেনরি! আজ থেকেই তুমি বিছানা পাচ্ছো
                                                জলের নিয়মিত যোগান পাচ্ছো।
এই স্যুপ তাদের জন্য নয় যাদের আত্মা আগে আগে যায়,
                                                তোমার যায়না নিশ্চয়ই।
উত্তর দিকের ট্রেনের আজই আসার কথা।
তোমার কালো কর্ডের জুতো আর অ্যাসপিরিন
                                                সেই ট্রেনেই আসবে হয়তো।
তোমার নামেরই আরেকজন সেই ট্রেন থেকে নামবে
পেট্রল পাম্প বন্ধ করতে করতে, জলের কল বন্ধ করতে করতে।
হাসো হেনরি। আত্মা আগে আগে থাকলেও
এই দামি স্যুপ আজ থেকে তোমার জন্যও।


।। প্রথম রেডিও থেরাপি ।।

ঝুঁকে আসা দেবতাকে কিছুটা চেনা মনে হয়েছিল।
ইনিই কি দশ বছর আগে টনসিল অপারেশন করেছিলেন আমার?

দেবতা পিঠ চাপড়ে দিলেন নরম হাতে। ঠোঁটে হালকা হাসি।
ছোট্ট আর চমৎকার একটা আইডেন্টিটি ট্যাগ আমার গলায় ঝুলিয়ে
রক্তচাপের যন্ত্র তুলে নিলেন।
মনে হয় ইনিই দশ বছর আগে টনসিল অপারেশন করেছিলেন আমার।

দেখলা ওঁর ডানহাত প্রায় নেই। আর বাঁ হাতের জায়গায়
মরে শক্ত হয়ে যাওয়া অ্যালবাট্রস ঝুলছে।
কেউ একজন চা এগিয়ে দেয়। দুটো বিস্কুট।
হ্যাঁ, ইনিই দশ বছর আগে টনসিল অপারেশন করেছিলেন আমার।


।। দ্বিতীয় রেডিও থেরাপি ।।

হেনরিকে যে মুক্তি দেবে তার গা থেকে
                             ঘুমের গন্ধ আসবে, পাপ আসবে

তাই একটা ফাঁকা ঘর ছেড়ে আরেকটা ফাঁকা ঘরে যাবার সময়
যখন মাটি ভিজিয়ে যাওয়ার দাগ রাখে হেনরি
এমনকি তখনও তীব্র এক সাদা রেখায়
                                                তার পা জড়িয়ে যায়।

তখন অনেকেই ছাই রঙের দেয়াল হয়ে উঠলেও
কেউ কেউ ঠিক বোঝে, হেনরি আর নিতে পারছে না


।। রেডিও থেরাপির সাত দিন পর ।।

ঢেউয়ের ওপর সাদা কর্কের মতো সারাদিন দুলে যায় হেনরি
আর অপেক্ষা করে অবিন্যস্ত নির্জন সেই রাস্তাটির জন্য।

দিনের সাথে তার নখের দূরত্ব সে এখন অনুমান করতে পারে।

নির্জন অবিন্যস্ত এই রাস্তাটিকে হেনরি এখন মোটামুটি মেনেই নিয়েছে।
এখন তার মুখে অতৃপ্তি বা খিদের ছায়া থাকেনা। ব্যথা থাকেনা।

দিনের সাথে নখের দূরত্ব সে এখন মোটামুটি অনুমান করতে পারে।



।। নেপোলিয়নের শেষ চিঠি ।।

জানিয়ে দিও ঘড়িটা উজ্জ্বলভাবে ঝুলছিল, ঝকঝক করে জ্বলছিল,
                                                কিন্তু কাঁটা ছিল না কোথাও।
এটাও বলো যে এমনকি মৃত্যুর মুহূর্তেও হেনরি


                                                বুট পরে থাকতে ভোলেনি।


বিশ্বরূপ দে সরকার

জল ও জলবায়ু

আমি বাঙালীর প্রতি ডাক্তার অনুভব করি
জ্বর হলে আমবাগান ও বৃষ্টির গন্ধ লেগে যায়
গড়িয়ে যাবার সম্পর্ক যাকে চিনি
সে পায়চারির মধ্যে ঢোকে এবং ব্লাউজের সঙ্গে ফোনালাপ করে

নড়াচড়া আসলে এক গভীর প্রতারনা
বাইরে থেকে অনুভব করি
তার শোষক মুঠির ভেতর
অপুষ্ট মাংসের নির্জন তিতির
সে যদি অন্তর্গত হয়, সে যদি সংক্রামক আয়নার কাছে
নিজেকে বর্ণনা করে
লাবণ্য ঘাই মারবে
বেদনার সঙ্গে রুমালের
হাওয়ার সঙ্গে অপেক্ষার যে প্রেম
তার ডালে ডালে আপেলের আত্মহত্যা
নেমে আসবে
এ গাঁয়ের বিবাহ, জ্বর, তাপমাত্রা নাকি ফুলগাছ
ডাক্তার ডিঙিয়ে ম ম করবে পংক্তি ...।

তারতম্য
জুতো সম্পর্কে পথের কিছু  দ্বিধাথরথর আছে
ধুলো জানে
কোঁকড়ানো কথা। অতিষ্ঠ কথা। ময়লা ঘটিত কথা।
সেইসব পড়ে তার চোখ নোনা স্বাদ পায়। শার্লক ফোটে
যেমন ঘাসের ওপর দিয়ে নেমে যাওয়া শ্যামল।
চৌখস গোড়ালির পাশে ফুটে ওঠা ঘাস ফুল।
এ এক মেঘলা চারণের দু-চরণ
এ যেন প্রচার বিমুখ আঙুলগুলোর কোমলতুতো অভিমত।

এমন আর কী


সোজা কথা আমার বিশ্বাস হয়েছে
কিন্তু এখনও পর্যন্ত অভিমান তোতলাতে দিইনি
কেন না দু একটা বালিকা এখনও কট্টর
আমার প্রয়াসে প্রস্তাব টানবে
আর জন্মক্ষণ একবার ফিসফিস করলে
থুতনির তিল তছনছ করে দেবে
তার শূন্যতা মুছবে না
এই রকম বিশ্বাস এসে দাঁড়িয়েছে
কোনো দুপুর বিকেল হলে আঙুল তাকে কষ্ট দেবে
দরকার মতো ওড়নার কুয়াশা
মেরামত করে নেবে সক্রিয় এমনকি
স্কার্ফেও শেষ পর্যন্ত কোন প্রোটিনের প্রয়োজন পড়বে না


জুড়তে থাকি
পছন্দ তুমি রজস্বলা গন্ধ,  তোমার স্মৃতি, তোমার আঁচড়
কালো মেয়ের মৌরিফুল তুমি
পাখির প্রথাগত এক বৈকালে এসেছিলে কিচিরমিচিরে
কারা যে সুখ! কারা যে মধু! সরু সরু স্নেহ
হয়তো তুমি জরায়ুঘটিত নও, হয়তো প্রচণ্ড নীলরং
প্রজাপ্রতি প্রসঙ্গ। উড়ে উড়ে গিয়ে ছিলে পাপড়ির
অস্তরাঙা ডাকে। সে সব তথ্য স্পষ্ট জানি না।
নিঃসঙ্গ মনে হলে,  স্পৃহা কমে এলে
 লোকালয়ে সন্ধ্যার মতো বিতাড়িত হলে
 ডোরাকাটা দক্ষিণ গ্রামের চরে
এই নৌকো রেখে যাবো




ভাস্বতী গোস্বামী

চতুর্থ প্রচ্ছদ

নদী শান্ত হলে অবশ্যই শেষ হয় কোন ডালিম বাগানে। সেখানে অফুরান ধারায় পেট বুক মাথা সেলাই হচ্ছে। অপারেশানের দিকচিহ্ন গুলিয়ে একটা শরীর ঢুকে যায় আরেক শরীরে। এভাবেই ট্রান্সপ্ল্যাণ্ট হয় নেসেসারী হিউম্যান পার্টস্। ধরো একটা ডালিমে ভরে উঠছে হয়তো আপেলের ক্ষুধা। আমিও নদীকে বেশ শুদ্ধ করে এলাম। নিজের শব বিচ্ছিন্ন করে ওখানে স্নাত হব। তার আগে অভুক্ত ক্ষিধেতে একটু হাত দি। মুখ মাথা হাঁ এদের বেশ করে চুমু খাই। থুতনী পরিয়ে দি পুরোনো মুখোশটাতে

ডালিম ডালিম করে এবার হরির লুট দেব। পত্ পত্ উড়বে আমার যৌনচিহ্ন। ধুয়ে ফেলে রসিয়ে খাব পোকাটে দাঁত জিভ চোখ। থুতু মূত্র বা বীর্যত্যাগেও ডালিমের আত্মসুখ হয়। এমন ডালিম ডালিম করার কি হল। পৃথিবীটাই আত্মরতিতে ভাসছে নাকি। এক প্রবল জোয়ার আসুক বা হিমবাহ। সমস্ত ডালিম ভরে দুলে উঠবে ফ্রীজার। জপতপ প্রাণায়াম সেরে চাষের শুরুয়াত হবে

তওবা তওবা। শব্দে কোথায় ভোর হল। ডালিমক্ষেতের ডানাগুলো ছাড়িয়ে রাখছে কেউ। ভেড়ামানুষেরা এক্ষুণি খেয়ে ফেলবে সব। একটু বাগান থাক চাও না কেনওজোন পেরিয়ে বত্রিশ ঘণ্টার ঝড় আসছে। আমি ভালো আছি। ডালিমক্ষেতের ঘাস শুকিয়ে বেশ ঝলসেছে চামড়া আমার। কোঁচকানো আলোয় ইন্দ্রিয় খেলা করে। সাড়া দিয়ে আমিও খুলি। প্রায়শই এমন খুলে বেড়াই আমি। শীত শরতের লিঙ্গ থাকে না এখানে। শুধু একটা কাঁচির অপেক্ষায় প্রহর। শুনছি। পেলেই পোড়া চামড়া কেটে ডালিমক্ষেত বানাবো

আজ সকালে ডালিমক্ষেতের সব দানাই বনসাই হয়ে গেছে। আকাশের আলো শুষে মাটি নিচ্ছে গেঁহু বজরা ছোলার শিষ। এখন আমি সাইকেল হবো। নতুন দিগন্ত মুমূর্ষু করছে এই ক্ষেত ঘর আলো ও বনসাইকে। তোমরা রাতের চোখে তুলে রেখো ওদের। জল ঝরে ক্ষেতি হোক। লাল সবুজ সমবায় নেমে যাবে মায়ের দুধে। বুকের ফাগুনে ফলন্ত ডালিম। নেড়েচেড়ে একবার অন্তত গৌণ করো ওকে

রসস্থ হয়েছেন ডালিমসাহেব। ভিতরে ধুকপুকে জনপদ। এদিকে ঘুম হচ্ছে সবটুকু। চাঁদ ফেটিয়ে ক্ষীর হবেজনপদের গন্ধে বিড়ালের ছায়া। ওর থাবায় বৃষ্টি এল। বুক পুড়ছে দুধের। মিঠে গন্ধে শরীর ঘোলায়। ডালিম প্রজন্ম ঝুমঝুমি খেলে সূর্য ডাকলো। বৃষ্টি ধুচ্ছে গাছের বাঁট। পোড়া মাটিতে রেনবো। নদী টেনে টেনে ডালিম শস্য খুঁজছে ------- ফাঁক করে মুখ ডোবাচ্ছে বুকে

সব ‘ হ ‘ য়ে হসন্ত লেগেছে। এবার নিপুণ ডালিমসময়। বৃষ্টিও আমার মতোই শুকিয়ে গ্যালো। তবু ঝরছে। রুক্ষ বলে কিছুই নেই এ দলিলে। পুরোটা মজে আছে ডালিম নেশায়। এই হাসিনা যৌবন নিয়ে কি করি। সবেতেই মায়ের মুখ লাগে। শ’য়ে শ’য়ে ডালিম বিক্রি করে দেব। অন্তত পুড়িয়ে দিই যৌন জ্যামিতি। তারপর সংবিধান। একের পর এক খসড়ায় নিষিক্ত হবে এক পৃথিবী ডালিমওয়ালা


রাতে আমার ডালিমবোধ তীব্র হয়। এত আঘাতেও প্রসব বিলম্ব কেন। হেকিমের পরেশানিতে দারুণ মজা পাচ্ছি। আর ডালিমে ফেটে পড়ছে পোশাকহীন টুকরো হাসি। ক্ষেতের পুরোটাই এখন দখল নিয়েছে ভাড়াটে পাখিরা। প্রসব দীর্ঘ হওয়ায় খাবার পাচ্ছে না তাদের সন্ততি। এ সমস্ত ডালিমের মতোই মুখরোচক। দু’ হাতে চটকাচ্ছি। নতুনের আগেই ভূমিষ্ঠ হচ্ছে রুমাল ঢাকা অজস্র ডালিম

তো ডালিমরা সব বড় হয়ে গ্যালোহাতে হাতে কালাশ্ নিকভ নিয়ে ক্যামন পালিশ হয়েছে দ্যাখো। ওরে আমি তোদের জন্মগত পিতা। এখন আর চোখে দেখতে পাই না। তো কি হল। ফুঁসে ওঠা ডালিমের রক্তে আমি যে লাল হয়ে যাচ্ছি। মাটির তাপে আগুন গলছে। এবার সব ফাইবার হয়ে যাবে। স্মাইলি হাসিতে মায়ুজ ফোটাবে ডালিমঘাতক





রোশনারা মিশ্র





অগ্নি রায়

ফুচকাপ্রবণ দিন

ফুচকাপ্রবণ দিন, একের পর এক উৎসব তোমার আঁচল বাজিয়ে দিয়ে সরে পড়েছে! অথচ আলজিভ পর্যন্ত রগরগে হয়ে গিয়েছে মরিচ সংবাদে। স্মৃতির ঝুড়িতে ঠান্ডা সাজানো গোল গোল শূণ্যতা শুধু। যার বিষন্ন ছিটে জামার হাতলে মুছে নিয়ে ওই সব গেরিলা-সন্ধ্যায় যারা তোমায় একদিন ঘিরে দাঁড়িয়েছিল, তাদের স্বাদ কোরক বিনিময় হয়ে গিয়েছে কবে। তেঁতুলগোলা এক্সপ্রেসে সবাইকেই দন্ডিত হয়ে ফিরে যেতে হয় বিচ্ছিন্ন সাফারিতে, যেখানে সাজানো পর্দা সরিয়ে, দ্যাখো, বইছে জেলুসিল-বাতাস



প্রশান্ত গুহমজুমদার

আমার জুতো

এই যে জুতোর মধ্যে পা ঢুকলো না
অর্থাৎ একটা সম্ভাবনার মধ্যে ঢুকে পড়লাম
অর্থাৎ আমার বড় হয়েছে
অথবা মুখটা সঙ্কুচিত
ব্যবহারের কার্পণ্যে হতে পারে
বয়সেও
অথচ বহু জুতোর অভ্যাস আমি করি নি
ভয়ে, সংক্ষিপ্ত হয়ে আসতে পারে এই আপেলের দিন।

এক প্রবহমানতার বিষাদ ক্রমে গ্রাস করে।
মান্যতা দিই তাকে।


কোলাহলমুখর জুতো অগত্যা আমার সঙ্গে ঘুমোতে যাচ্ছে


সুমী সিকানদার

কর্ণিয়া

সে আমায় মন দিয়ে বোঝায় কিভাবে
ধারাবর্ণনা করে  সে তার শব্দহীন লিরিক
সে আমার আঙ্গুলে আঙ্গুলে আঁকে
চড়া দামের উচঁনিচু ব্রেইল তাতে বেহালারা নেপথ্যে বাজছিলো
 
তার নিজস্ব প্রজেক্টরে দেখায়  বিস্তারিত সব
যা কিছু আমি দেখিনা শতভাগ কর্ণিয়া নিয়ে..
সে তার পান্ডূলিপিতে ডাউনলোড করেছে  
১লা বৈশাখ সমেত ঝড়ের বিরতি
এক মঞ্চায়নে আমি তারে শুনে নেই দীর্ঘকবিতায়,
দেখে ফেলি নির্মম তার মমতামাখা দৃষ্টিহীনতা
অত"পর ..............
তার চোখেরা কুঠিবাড়ীর ওপর আলো ফেলে এঁকে গেছে পেন্সিল স্কেচ
আমি কেন শুধু তার চোখে আলো ফেলেও
উদ্ধার করতে পারিনি মহড়া লুপ্তাক্ষর



বায়োস্কোপের নেশা

আলমারি খোলা পেয়েই তাতে ঢুকে পড়েছি ,আহ। সারাক্ষণ বন্ধ থাকা কিছুকে আচমকা খোলা দেখতে দারুণ লাগে তা ছোট থেকেই বুঝেছি।
সাবধানে ড্রয়ার খুলতেই চট করে বেরিয়ে এলো লুকানো মন্ত্রণালয়।
শুরু হলো চারকোনা বায়োস্কোপ।
খামের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলে ঝাঁকড়া চুলের পুরোনো তন্বী তুমি।কিছু সাদা কালো কিছু রঙ্গীন । কি সুন্দর তোমাকে দেখতে মা। এরকম খোলামেলা রাতপোশাকটি দিনে কখনও দেখিনি।
আরেকটি ছবিতে চেনাঅচেনা নারীরা পোশাকহীন অবয়বে বড় সুখী ভঙ্গীতে আয়নায় তাকিয়ে ছিলেন, যাতোটা সুখী তাদের পোশাকসহ দেখাতো না। 
একবার তাকিয়েই চোখ ফিরিয়ে নিয়েছি পাতাল্পুরীর মাণিক্যথেকে। এসব বড়দের ছবি দেখতে নেই।আমার তখন সদ্য গোফ উঠবে উঠবে অবস্থা।
বায়োস্কোপ চলছে।
 
পরের দৃশ্যে আমার হাতে উঠে এসেছে একটা মরা চ্যাপ্টা গন্ধহীন ফুল। কেউ দিয়েছিলো নাকি তুমিই কাউকে দেবার জন্য রেখে রেখে শুকিয়ে ফেলেছো তা বোঝা গেলোনা। ফুলার রোডের বাড়িতে সেসময় তিতাসকাকু খুব আসতেন ,তাই না ?
বায়োস্কোপ চলছে।
 
এরপর সামনে এলো একপাতা ট্যবলেট নাম ওভাকন ।তাতে কি হয় ঠিক জানিনা । বিজ্ঞাপনের গানটা শুনি কিন্তু পুরো বুঝিনা। আরেকটু বড় হলে নিশ্চয়ই বুঝবো। ?
আরো কিছু দৃশ্যঃ 
আরো কিছু হাবিজাবি কাগজ ছিলো, আর ছিলো একটা চারকোনা প্যাকেট তাতে লেখা 'রাজা'। এই রাজা এক নিভৃত ড্রয়ারের কোনায় কোন রাজ্য শাসনে মগ্ন তা বোঝার সময় নেই আমাকে ড্রয়ার বন্ধ করতে হবে। কেউ এসে পড়লে রক্ষা নেই। যাবার আগে রুপালী কয়েন দেখে এতক্ষণ যা যা দেখেছি গুলিয়ে ফেললাম।
সব এলোমেলো রেখে শুধু কয়েন ক'টা হাতের মুঠোয় পুরে নিলাম ।ড্রয়ার টা বন্ধ করে দেবার সাথে সাথে রাজা সমেত নিষিদ্ধপুরীটা ঝপ করে বন্ধ হয়ে গেছে। মিলিয়ে গেছে কোঁকড়া চুলে তুমি আর অজানা নারীরদের সুস্থিরচিত্র। এ নারীদের মাঝে যে তুমিও যে ছিলে সেই কিশোর বেলায় তা বুঝিনি ।
যদি তুমি আমার কয়েন চুরির কথা বলতে আসো ,
আমিও ড্রয়ারে রাখা রাজা চুরির কথা সব্বাইকে বলে দেবো মা।

মেসেজ

দুর্ভেদ্য বনানীর পর ,
আঁকাবাকা সর্পিল পথ চেরা স্রোতের পিছু পিছু ঘুরতে ঘুরতে,
পেয়ে গেছি আমার
সানসেট পয়েন্ট। একা
এগিয়ে যেতে যেতে দু'হাতে ঝাড়মোছ করেছি ঝাড়বাতির স্মৃতিভ্রষ্টতা।
 হলুদাভ ঘুমঘুম আলোর ফিসফিসানি চেপে গেছি কাউকে বলিনি।
 আমি জানি কার সাথে তার
  অন্তহীন রঙ্গতা।
দু' হাত উপচে উঠেছে স্লিম ফিগারের দোলনচাপা
তারা লম্বা কিউ ধরে দাঁড়িয়ে ছিলো পানিতে নামবে বলে
আমি তাদের গ্লাস পেইন্ট করা ফুলদানীতে জমাই
রেকাবীতে
ভিজছে অলস বেলী।তার মুখরতা থেকেই শুরু হয় ঘ্রাণসূত্র।
শাড়িদের একে একে জলছাপ দিয়ে গেছি সারা রাত জেগে...
পাড়ে আর আঁচলেই যত
উচ্চাংগ তারানা
পারদেরা রাতেই চোখে বসে যায় গাঢ বন্দনায়।
তখন তার ডাক নাম হয় কাজল। আমি তাকে চোখের পাতায় রাখি।
বইগুলো বড় মায়াবতী
বসে থাকলে হাতে হাতে ঘোরে
,
শুয়ে থাকলে বুকের ওপর সেও উপুড় হয়ে হয়ে থাকে কোনা ভেঙ্গে।
তাদের নরম কাপড়ে মসৃন করেছি এবার
ছদ্মনাম
টা নির্ভয়ে ঝকঝক করুক।
রান্নাঘরটা বড্ড মিশুক।টুংটাং মিশে থাকে বোন চায়না কাপ এবং গ্রীন - টি।  
  ঢাকাদেয়া  ত্রিফলার জল গিলে নিও অর্নবের রিংটোন না ফুরাতেই ।
স্কেল চেঞ্জার হারমনিয়ামটা তবলা ,মন্দিরাদের পাশেই থাকে। মুখরা বেজে ওঠে তানপুরা.
উড়ে এসে ডাকতেই পারে অচেনা ডাহুক
খাঁজকাটা লুব্ধকআলোয় পামট্রী আর বনসাই মুগ্ধ সে গান শুনবে ,শুনবেই।
ভোরের আগে অন্ধ পাখীর ডানায় গাঢ অন্ধকার  
আর আমি আরো কিছু অন্ধকার খুঁজে পাবো পুরাতন গীর্জার আশে পাশে।
পবিত্রতায় পরমার্থে।
হারানো বসন্তের সুরে বৌনিয়া ফুলের ঘ্রাণ খুঁজতে খুঁজতে বাবার কাছে চলে যাই।
বাবা অনেক দিন একা আছেন।


অতনু ভট্টাচার্য

ঢং ঢং ঢং

আছিযদির কথা নদী হয়ে বয়ে গ্যাছে যা ছিল মনে হারিয়েছি বনেআর বলো,কতটা বাকি রইল জানার? শোনো, ইচ্ছামৃত্যুর এইসব টীকাই কিছুটা দ্বিধা শেষে রূপকথা হয়ে যায়আর ডানদিক বামদিক নেই সামনে পেছনে নেই কিছু গুজবও তবু রটে যায় গরম চায়ে বিস্কুট পড়ে ঢোল হয়ে ওঠে যেমনএসবে কাজ নেই যখন কবিতা খুঁড়তে খুঁড়তে শেষটায় উদলা আকাশটাই বেড়িয়ে পড়ে  

পুরোটাই মিথ্যা এত বড় মহৎ মিথ্যা চেনা হলে, চাওয়া-পাওয়া কেটে যায় কাটাকুটি শেষ হলে সে অন্য মানুষ, তার কবিতা বড় অস্বস্তি দেয় আপাতত এটুকু জেনে পাঠশালার ঘন্টা নিজেরাই বাজিয়ে দিই চলো

স্বগতোক্তি শুধু আর কিছু , আর কিছুই নয় নেপথ্যে বেদনা কাজ করে তাকে চিনতে চিনতে বেলা যায় অতিসামান্য, তুচ্ছ এই সব  লেখাজোকা শীত তাঁবু সার্কাস অলীক অলীক পৃথিবী

নিজের ছায়ায় এসে দাঁড়াই দেখি আর ভুলে যাই ভুলি, তাই দেখি এইভাবে বাঁচার কেন্দ্রে এসে ঝুঁকে দেখলাম দু-চার ফোঁটা জলের কষ্ট কেমন নড়ে লাফায় দয়ালু সেজে আঙুল হয়ে নামতেই কষ্টের কাঁটা লেগে দম বেড়িয়ে গেলো ! এই আয় করা কষ্ট থেকে ভুলতে পারার প্রান্তে জন্মদিনের পায়েসবাটি না থাক আছে আমার ছায়া তাই আমিও আছি