Wednesday, April 13, 2016
১..
"মাছবুড়ির প্রোটিন ট্রান্সফরমার "
আমাকে পাশ নিল মাছবুড়ি
মাছ খিলক্ষেত ক্যালভার্টের উপর...
বুড়ির চুবড়ী ভর্তি বরফ বিলাসপুর রুই
যার রঙে গন্ধ-আমিষ
বুড়ির নোংরা শাড়ির তলা দিয়ে
আড়তের জল চপচপ পায়ের নিচে দিয়ে
অনেকটা নিচে দিয়ে
ক্যালভার্টের ছায়া ছেড়ে
সরে যাচ্ছে একটা জ্যান্ত পশ্চিমবঙ্গ রুই
যার রঙে গন্ধ-আঁশটে
সকালে আমিষী মরশুম আসে
এ দেশে বুড়ির আঁশটে গন্ধ দিয়ে
মাছ মরে গেলে প্রোটিন হয়
বুড়ি চলে গেলে আঁশটে আমিষ হয় ...
২.." সেই ঘুমালু মাছবুড়ির বাকমন্দ "
কাল একটি ঝিমাই দুপুরে, মাছবুড়িকে
দ্যাখা গ্যাছে কাঠের পিঁড়িতে মাথা দিয়ে ঘুমোতে। আজ আয়েশী বাদ দিয়ে হাটখোলা এই রকে
কেন বুড়ি কাঠ কাঠ ঘুম রাখছে? এই প্রশ্নেই মিশে যাচ্ছিল শীতল
খুঁড়োর বিড়ির ধোঁয়া। প্রশ্ন নিয়ে যাচ্ছিল, মিত্রিদের বড় বউ।
যে সবে ফিরলো দুপুরের বিছানা থেকে। তার ধার আছে বুড়ির কাছে।ফিরে এসেছে সকালের আঁশ গন্ধ নেওয়া নেশাখোর মাছি।
বুড়ির যেকোন কাপড়ের ভাঁজে শরীর মিশিয়ে নিতে চায় সে। একটু আঁশ দাও! একটু আঁশ দাও! বুড়ি এখন মাছি সমেত তোয়াক্কাহীন একটি কাষ্ঠল ঘুম মেশাচ্ছেন এই দুপুর জুড়ে।
ঘুম নেই হচ্ছে, যারাই বুড়িকে ঘুমাতে দেখছে এভাবে। কেউ
ধার-উসুল, কেউ পঞ্চায়েত থেকে জি আর না দেওয়ার ভয়ে, কেউ বুড়ির নতুন গালাগাল শোনার ইচ্ছায়। বুড়ি ঘুম ভাঙলে পরে, কেউ যদি তাকে "মল্লিক ফটক 'বলে, তাহলে একটা নতুন গাল দেয় বুড়ি ; যেমন -করলাভাতারী,
কলামাগী, চুনাহাগী ঢিপিমাগী ও ইত্যাদি। বুড়ির
এই ঘুম নিয়ে আজ সবাই বাজিমাত হচ্ছে, রেডিও ও জে ভি এল ছাড়াই।
একটু পড়েই বুড়ি ঘুম ভাঙলো। এবং চুলের মাছুলি স্টাইলে খোঁপা বাঁধতে বাঁধতে চলে গেল
মা গঙ্গার দিকে। তখনই, শ্রীমতী অধ্যাপিকাকে দ্যাখে ফ্যালে
বুড়ি। শ্রীমতী তখন গাঁজা-মদ-নেশা-মুক্তিকেন্দ্রের ফোন নং লিখছেন ধাসু
অ্যান্ডড্রয়েডে। আজ, বুড়ি কোন নতুন গালাগালি দেয়না। শুধু
ফিসফিস করে বলে, ....নাঙচুন্নী ...নাঙচুন্নী...নাঙচুন্নী...
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
দুটো কবিতা পড়লাম। প্রথম কবিতায় একটা জ্যান্ত পশ্চিমবঙ্গ রুই চমৎকৃত করল। এই যে সকালে আমিষী মরশুম আসে এবং মাছ মরে গেলে প্রোটিন হয় আর বুড়ি চলে গেলে আঁশটে আমিষ হয় এই বোধ নাড়িয়ে দেয় ভেতর পর্যন্ত। দেখতে পাই চলমান সময়ের চালচিত্র, ভাবনাবিলাস ও ভবিতব্যের অচিহ্নিত ভ্রুণ।
ReplyDeleteদ্বিতীয় কবিতায় খানিকটা গল্পের ঢঙে কবিতা এগোয়। এলায়িত ভঙ্গিমায় কাহিনী যেন সময় আঁকে নিজস্ব ঢঙে। যা আসলে কবিরই নিজস্ব কাব্যবিন্যাস। শেষ লাইনে এসে নাঙচুন্নী শব্দবন্ধ ফিসফিস করে কানের কাছে ঘুরে ঘুরে বেজেই চলে। টানটান হয়ে ওঠে শরীর শরীর আলো। অনেকক্ষণ ভেতরে ভেতরে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে কবিতাভাবনা।
এটা আমার পরম প্রাপ্তি
Delete